শাবিপ্রবিতে শিক্ষার্থীর আত্মহত্যায় তোলপাড় : তদন্ত কমিটি গঠন

প্রকাশিত: ৪:০৭ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ১৫, ২০১৯

শাবিপ্রবিতে শিক্ষার্থীর আত্মহত্যায় তোলপাড় : তদন্ত কমিটি গঠন
  • একবছর আগে তার পরিবার যোগাযোগ করেছিল: উপাচার্য

  • অনার্সে ১ম হওয়া সত্ত্বেও থিসিস না পাওয়ার ব্যাখ্যা নেই


শাবিপ্রবি প্রতিনিধি
শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ^বিদ্যালয়ের জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং এন্ড বায়োটেকনোলজি (জিইবি) বিভাগের ২০১১-১২ সেশনের শিক্ষার্থী তাইফুর রহমান প্রতীকের আত্মহত্যার ঘটনায় রহস্যের সৃষ্টি হয়েছে। আত্মহত্যা নাকি আত্মহত্যায় প্ররোচনা এ নিয়ে ক্যাম্পাসে বইছে আলোচনা সমালোচনার ঝড়।

অনার্সে প্রথম হওয়া সত্ত্বে মাস্টার্সের রেজাল্টা খারাপ হওয়া ও থিসিস করার জন্য সুপারভাইজার না দেওয়ায় হতাশাগ্রস্থ হয়ে আত্মহত্যা প্ররোচিত হয়েছে বলে পরিবার দাবি করছে। সোমবার বিকেলে নগরের কাজলশাহ এলাকার একটি বাসা থেকে পুলিশ ফ্যানে ঝুলন্ত প্রতীকের লাশ উদ্ধার করে।

এদিকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রতীকের আত্মহত্যার জন্য শাবিপ্রবি’র জিইবি বিভাগের শিক্ষকদের দায়ী করেছেন তার বড় বোন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কমিউনিকেশন ডিসঅরডার বিভাগের শিক্ষক শান্তা তাওহিদা। অনার্সে ১ম শ্রেণীতে ১ম হওয়া হওয়া সত্ত্বেও প্রতীককে মাস্টার্সে সুপারভাইজার না দেয়া এবং বিভিন্ন কোর্সে কম নাম্বার দেয়ার অভিযোগ করেন শান্তা তাওহিদা।

এদিকে প্রতিকের বাবা তাওহিদুজ জামান সিলেটের কোতোয়ালি থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা দায়ের করেছেন বলে জানান থানার এসআই আকবর হোসেন ভূইয়া।

ঘটনার বিষয়ে উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ জানান, বছর খানেক আগেই প্রতীকের ফ্যামিলি থেকে সুপারভাইজার না পাওয়ার বিষয়টি আমাকে জানানো হয়। আমি বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগদানের পরপরই ডিপার্টমেন্টকে বিষয়টি অবগত করি। পরবর্তীতে পরিবারের কেউ যোগাযোগ না করায় ফলাফল কি হয়েছিল এই ব্যাপারেও আমাকে অবগত করা হয়নি।

তদন্ত কমিটি গঠন: উপাচার্য আরও জানান, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তার মৃত্যুর বিষয় নিয়ে যে সব আলোচনা উঠেছে তা খতিয়ে দেখার জন্য একটি উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের এগ্রিকালচার এন্ড মিনারেল সায়েন্স অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ বেলাল উদ্দীনকে প্রধান করে এই কমিটি করা হয়। কমিটির অন্য দুইজন সদস্য হলেন গণিত বিভাগের অধ্যাপক ড. মো আনোয়ারুল ইসলাম ও সহকারী প্রক্টর মো. সামিউল ইসলাম।

এদিকে বিভাগীয় সূত্রে জানা যায়, অনার্সে ১ম হওয়া ঐ শিক্ষার্থী মার্স্টাসে যৌথভাবে ৭ম স্থান অধিকার করেছেন। মাস্টার্স ১ম সেমিস্টারে তার রেজাল্ট ৩.৫৮ হলেও ২য় সেমিস্টারে তার রেজাল্ট ৩.০৮ হয়, যা সম্মিলিত ভাবে ৩.৩৩ এবং বিভাগে সপ্তম।

এ ব্যাপারে জিইবি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক শামসুল হক প্রধান বলেন, সুপারভাইজার না দেয়া বিষয়ে আমি কিছু বলতে পারছি না। আমি কিছুদিন হল বিভাগীয় প্রধানের দায়িত্বে এসেছি।

সুপারভাইজার না দেয়ার বিষয়ে বিভাগের সদ্য সাবেক হওয়া বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ড. আবুল কালাম আজাদ বলেন, আমরা কিছু ক্রাইটেরিয়া ফলো করে থাকি। ঐ সেশনে একজন শিক্ষক একজন শিক্ষার্থী নিতে পারেন। যারা নিয়েছেন তাদের পর সে আর সুপারভাইজার খুঁজে পাননি। তারপর বিভাগে জানোনো হয়েছে কাউকে সুপারভাইজার করানোর জন্য বিভাগ সর্বসম্মতিক্রমে হয়তো চিন্তা করেছে কিন্তু কোন টিচার রাজি হয়নি।

তার বিরুদ্ধে তদন্তের বিষয়ে বলেন, এর আগে সে অন্য একটা মেয়েকে নিয়ে এক্সিডেন্ট করেছিল এবং বিভাগের শিক্ষকদের সাথে উচ্চবাচ্য করেছিল। যার কারণে বিভাগ তদন্ত করেছিল। প্রশাসনের অনুমতি ছাড়া তদন্তের বিষয়ে বলেন, সবকিছু আমাদের জানা ছিল না। ১ম শ্রেণিতে ১ম হওয়া একজন শিক্ষার্থী সুপারভাইজার না পাওয়ার বিষয়ে তিনি কোন সদোত্তর দিতে পারেননি।

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

সর্বশেষ ২৪ খবর